
সূচিপত্র
জিলহজের প্রথম দশ দিনের বিশেষ আমল
জিলহজের প্রথম দশ দিনের বিশেষ আমল; এই দিন এই সময় মহান আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন এবং বিভিন্ন ভাবে বিন্যস্ত করেছেন। বছর ,মাস, সপ্তাহ,দিন ,রাত, ইত্যাদি তিনিই সাজিয়েছেন। আর তিনিই আপন হিকমতে ও কুদরত বলে বছরের কিছু মাস, মাসের কিছু দিন এবং দিনের কিছু অংশকে বিশেষ বৈশিষ্ট্য মন্ডিত করেছেন। যিলহজ মাস সেগুলোর অন্যতম। এ মাসটি হজ্বের মাস। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ এ মাসের সাথে জড়িত। জিলহজ্ব মাসের প্রথম ১০দিনের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। সূরা ফাজরে আল্লাহ তাআল বলেন;
والفجر وليال عشر
শপথ ফজরের, শপথ দশ রাতের।
(সূরা ফজর ০১ ও ০২)
হযরত ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হযরত ইবনে জুবায়ের রাযিআল্লাহ তা’আলা আনহুও হযরত মুজাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখ মুফাসসির সাহাবী ও তাবেয়ীর মতে দশ রাত বলতে জিলহজ মাসের প্রথম দশ রাতকে বোঝানো হয়েছে।
(তাফসীরে ইবনে কাসির ৪/৫৩৫)
এছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিস দ্বারা আরো স্পষ্ট হয়ে যায় এভাবে যে, হযরত ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন;
، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” مَا الْعَمَلُ فِي أَيَّامِ الْعَشْرِ أَفْضَلَ مِنَ الْعَمَلِ فِي هَذِهِ ”. قَالُوا وَلاَ الْجِهَادُ قَالَ ” وَلاَ الْجِهَادُ، إِلاَّ رَجُلٌ خَرَجَ يُخَاطِرُ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فَلَمْ يَرْجِعْ بِشَىْءٍ ”.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত; নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; যিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের ‘আমলের চেয়ে অন্য কোন দিনের ‘আমলই উত্তম নয়। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, জিহাদও কি (উত্তম) নয়? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন; জিহাদও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা ছাড়া যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়েও জিহাদে যায় এবং কিছুই নিয়ে ফিরে আসে না।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৯৬৯, শরহু মুসকিলিল আছার হাদিস নং ২৯৭০)
তাই নিম্নে আমরা এ মাসের প্রথম দশকের বিশেষ কিছু আমলের উল্লেখ করছি;
জিলহজ মাসের প্রথম দশকের বিশেষ কিছু আমল;
এক;
জিলহজ্ব মাসের চাঁদ ওঠার আগেই চুল, মোচ এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের পশম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ফেলা। তেমনি ভাবে হাত পায়ের নখ কেটে ফেলা। অতঃপর কোরবানির দিন কোরবানি আদায় করার পর তা পরিষ্কার করে ফেলা। মধ্যবর্তী সময়ে এগুলো কাটা থেকে বিরত থাকা। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি হাদীসে ইরশাদ করেছেন;
وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو اللَّيْثِيُّ، عَنْ عُمَرَ بْنِ مُسْلِمِ بْنِ عَمَّارِ بْنِ أُكَيْمَةَ اللَّيْثِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ، يَقُولُ سَمِعْتُ أُمَّ سَلَمَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو اللَّيْثِيُّ، عَنْ عُمَرَ بْنِ مُسْلِمِ بْنِ عَمَّارِ بْنِ أُكَيْمَةَ اللَّيْثِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ، يَقُولُ سَمِعْتُ أُمَّ سَلَمَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ كَانَ لَهُ ذِبْحٌ يَذْبَحُهُ فَإِذَا أُهِلَّ هِلاَلُ ذِي الْحِجَّةِ فَلاَ يَأْخُذَنَّ مِنْ شَعْرِهِ وَلاَ مِنْ أَظْفَارِهِ شَيْئًا حَتَّى يُضَحِّيَ ” .
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; যে লোকের কাছে কুরবানীর পশু আছে সে যেন যিলহাজ্জের নতুন চাঁদ দেখার পর ঈদের দিন থেকে কুরবানী করা পর্যন্ত তার চুল ও নখ না কাটে।
(ই.ফা. ৪৯৫৯, ই.সে. ৪৯৬৫, সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫০১৫,জামে তিরমিযি হাদিস নং ১৫২৩, সুনানে নাসাঈ হাদিস নং ৪৩৬১,৪৩৬৩, সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং ২৭৯১, মুসনাদে আহমদ হাদিস নং ২৬৪৭৫, আসসুনানুল কুবরা লিল ইমাম বায়হাকী ১৯০৪৩)
এছাড়া যারা কুরবানী করবে না তারাও উক্ত আমলটি করলে আশা করা যায় তারাও উক্ত ফজিলত প্রাপ্ত হবে অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা একটি কোরবানির সাওয়াব দান করবেন।
দুই;
বেশী নফল ইবাদত করা; নফল ইবাদত যেকোনো এবাদত হতে পারে নামাজ, রোজা, তসবি-তাহলীল ইত্যাদি।
একটি হাদিসে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন;
، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” مَا الْعَمَلُ فِي أَيَّامِ الْعَشْرِ أَفْضَلَ مِنَ الْعَمَلِ فِي هَذِهِ ”. قَالُوا وَلاَ الْجِهَادُ قَالَ ” وَلاَ الْجِهَادُ، إِلاَّ رَجُلٌ خَرَجَ يُخَاطِرُ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فَلَمْ يَرْجِعْ بِشَىْءٍ ”.
ইব্নু ‘আব্বাস(রাঃ) থেকে বর্ণিত; নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; যিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের ‘আমলের চেয়ে অন্য কোন দিনের ‘আমলই উত্তম নয়। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, জিহাদও কি (উত্তম) নয়? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন; জিহাদও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা ছাড়া যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়েও জিহাদে যায় এবং কিছুই নিয়ে ফিরে আসে না।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৯৬৯, শরহু মুসকিলিল আছার হাদিস নং ২৯৭০)
তিন;
জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকের যে সকল নফল ইবাদতের কথা এসেছে, তার মধ্যে রোজা অন্যতম। প্রথম দশ দিনে রোজা রাখা অর্থাৎ ঈদের দিন ব্যতীত বাকী নয় দিন রোযা রাখার কথা হাদিসে এসেছে। হাদিসটি হল;
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻫﺎﺷﻢ ﺑﻦ اﻟﻘﺎﺳﻢ، ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﺇﺳﺤﺎﻕ اﻷﺷﺠﻌﻲ اﻟﻜﻮﻓﻲ، ﻗﺎﻝ: ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﻤﺮﻭ ﺑﻦ ﻗﻴﺲ اﻟﻤﻼﺋﻲ، ﻋﻦ اﻟﺤﺮ ﺑﻦ اﻟﺼﻴﺎﺡ، ﻋﻦ ﻫﻨﻴﺪﺓ ﺑﻦ ﺧﺎﻟﺪ اﻟﺨﺰاﻋﻲ، ﻋﻦ ﺣﻔﺼﺔ، ﻗﺎﻟﺖ: ﺃﺭﺑﻊ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻳﺪﻋﻬﻦ اﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ اﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ: ﺻﻴﺎﻡ ﻋﺎﺷﻮﺭاء، ﻭاﻟﻌﺸﺮ، ﻭﺛﻼﺛﺔ ﺃﻳﺎﻡ ﻣﻦ ﻛﻞ ﺷﻬﺮ
নবীকারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোযা,যিলহজ্বের প্রথম দশকের রোযা , এবং প্রত্যেক মাসের তিন রোযা কখনো ছাড়তেন না ।
(মুসনাদে আহমদ হাদিস নং ২৫৯২০)
চার;
বেশি বেশি তাসবীহ তাহলীল পড়া;
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন;
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﻔﺎﻥ، ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﻋﻮاﻧﺔ، ﻋﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺯﻳﺎﺩ، ﻋﻦ ﻣﺠﺎﻫﺪ، ﻋﻦ اﺑﻦ ﻋﻤﺮ، ﻋﻦ اﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ اﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ: ” ﻣﺎ ﻣﻦ ﺃﻳﺎﻡ ﺃﻋﻈﻢ ﻋﻨﺪ اﻟﻠﻪ ﻭﻻ ﺃﺣﺐ ﺇﻟﻴﻪ اﻟﻌﻤﻞ ﻓﻴﻬﻦ ﻣﻦ ﻫﺬﻩ اﻷﻳﺎﻡ اﻟﻌﺸﺮ، ﻓﺄﻛﺜﺮﻭا ﻓﻴﻬﻦ ﻣﻦ اﻟﺘﻬﻠﻴﻞ ﻭاﻟﺘﻜﺒﻴﺮ ﻭاﻟﺘﺤﻤﻴﺪ
হযরত ইবনে উমর রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আল্লাহ তায়ালা নিকট কোন দিনের নেক আমলই এ দশদিনের নেক আমল চেয়ে প্রিয় ওঅধিক গুরুত্ব পূর্ণ নয়। সুতরাং তোমরা বেশি বেশি তাকবীর, তাহমীদ, ও তাহলীল পাঠ কর ।
(মুসনাদে আহমদ হাদিস নং৬১৬৪…মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা হাদিস নং ১৩৯১৭)
পাঁচ;
আরাফার দিনে রোজা রাখা; ইসলাম একটি পরিপূর্ণ এবং ভারসাম্যপূর্ণ দিন। বিভিন্ন বিধানের মধ্যে ইসলামের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। এরই একটি হল আরাফার দিনের বিধান। হাজীগণ যেহেতু আরাফার দিনে হজের গুরুত্বপূর্ণ আমল আরাফার ময়দানে অবস্থান করা- এ ইবাদতে লিপ্ত থাকবেন, তাই তাদের যেন উক্ত আমলে কোন কষ্ট বা ত্রুটি না হয় এজন্য তাদেরকে আরাফার দিনে রোজা রাখতে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন। এক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যক্তিরা যেহেতু তাদের উক্ত আমল নেই আর আরাফার দিন একটা ফজিলতপূর্ণ দিন, সেজন্য তাদেরকে রোজা রাখার ব্যাপারে উৎসাহিত করে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস বর্ণনা করেছেন;
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدٍ الزِّمَّانِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي قَتَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدِ اسْتَحَبَّ أَهْلُ الْعِلْمِ صِيَامَ يَوْمِ عَرَفَةَ إِلاَّ بِعَرَفَةَ .
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আরাফাতের দিনের রোযা সম্পর্কে আশা করি যে, তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন।
(সুনানে ইবনু মাজাহ ১৭৩০, মুসলিম২৬৩৬)
আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ কাতাদা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। আরাফাতে অবস্থানরত ব্যক্তিদের ছাড়া অন্যদের জন্য এই দিনে রোযা পালন করাকে বিশেষজ্ঞ আলিমগণ মুস্তাহাব বলেছেন।
(জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৭৪৯)
একটি ভ্রান্তির নিরাশন;
হাদিসে আরাফার দিনে রোজা রাখার বিভিন্ন ফজিলত বর্ণিত হয়েছে, তাই অনেক মানুষই এদিনে বিভিন্ন এবাদতে লিপ্ত থাকতে চান। এখন প্রশ্ন হল আরাফার দিন সৌদি আরবে যেদিন হয়, আমাদের দেশে সেদিন জিলহজের ৮ তারিখ থাকে এখন আমরা যদি আরাফার দিনে রোজা রাখতে চাই বা অন্যান্য ইবাদত করতে চাই তাহলে আমরা কোন দিন ইবাদত করব?
এর সহজ উত্তর হল; আরাফার দিন নয়। “ইওমু আরাফা” হলো; একটি শরয়ী পরিভাষা। উদ্দেশ্য হলো জিলহজের ৯ তারিখ। তাই আমাদের দেশে কেউ যদি উক্ত দিনে আমল করতে চায় তাহলে সে নয় তারিখে আমল করবে। আট তারিখে নয়।
ছয়;
আরাফার দিন বেশী বেশী দোয়া করা; আরাফার দিন নিম্নে হাদিসে বর্ণিত দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করা;
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ خَيْرُ الدُّعَاءِ دُعَاءُ يَوْمِ عَرَفَةَ وَخَيْرُ مَا قُلْتُ أَنَا وَالنَّبِيُّونَ مِنْ قَبْلِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
‘আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) কর্তৃক পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও তার দাদা থেকে বর্ণিত; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন; আরাফাতের দিনের দু’আই উত্তম দু’আ। আমি ও আমার আগের নাবীগণ যা বলেছিলেন তার মধ্যে সর্বোত্তম কথা; “আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোন অংশীদার নেই, সার্বভৌমত্ব তারই এবং সমস্ত কিছুর উপর তিনি সর্বশক্তিমান”।
(জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৮৫)
সাত;
৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসরের নামাজের পর পর্যন্ত প্রতি ফরজ নামাযের পর একবার তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব।
তাকবীরে তাশরীক হলো;
اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أكْبَرُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ وَلِله الحَمْدُ
জামাতে হোক বা একাকী আদায় করা হোক সর্বাবস্থায়-ই এই তাকবীর পড়তে হবে। পুরুষগণ একটু আওয়াজ দিয়ে এবং মহিলাগণ আস্তে আস্তে পড়বে।
১০ তারিখে কোরবানি করবে। এ বিষয়ে আমাদের কুরবানীর ইতিহাস, গুরুত্ব এ ফযিলত প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা এসেছে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে উক্ত দিনগুলোর সময়কে ভালো কাজে এবং নেক কাজে ব্যয় করার তৌফিক দান করুন এবং সকল প্রকার গুনাহ্ থেকে আমাদের হেফাজত করুন।
এখানে মন্তব্য করুন
লেখক পরিচিতি
নামঃ মুহাম্মদ সালমান হুসাইন।
ইফতাঃ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ, জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ।
উলুমুল হাদিসঃ ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ, মাদ্রাসা বাইতুল উলুম ঢালকানগর।
তাকমীলঃ ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ, মাদ্রাসা বাইতুল উলুম ঢালকানগর।
হিফজঃ ২০০৭ শিক্ষাবর্ষ, জামিয়া আরাবিয়া হাজী ইউনুস কওমী মাদ্রাসা।
সিনিয়র শিক্ষকঃ হাজিপাড়া কাশীপুর নারায়ণগঞ্জ