বাংলাদেশের সকল হালকার উলামাগণ সময়, পরিস্থিতি, দুশমন, বড় ফিতনা নির্ণয়, প্রয়োজনের দাবী ও চাহিদামতে ইসলামের ফরয দায়িত্ব আন্জাম দেয়া ভুলে গেছে ৷ তাই তারা আজ মানযিল ভোলা ও পথহারা হয়ে উম্মাহকে নিয়ে সেই হাবিয়ার পথে হাটছে, যে হাবিয়ার গর্তে পড়ে স্পেনের উলাম-তলাবা, বাগদাদের উলামা-তলাবা, বুখারা-সমরকন্দের উলামা-তলাবারা নিজেরা ধ্বংস হয়েছে আর সাথে ধ্বংস করেছে তিনটি জিনিস : ১.ইসলাম ২.মুসলিম জাতি ৩.মুসলিম দেশ
বাংলাদেশের সকল হালকার উলামাগণ মানযিল হারিয়ে ভুল পথে যাত্রা; ইল্লা মাশাআল্লাহ

বাংলাদেশের সকল হালকার উলামাগণ মানযিল হারিয়ে ভুল পথে যাত্রা; ইল্লা মাশাআল্লাহ

বাংলাদেশের সকল হালকার উলামাগণ সময়, পরিস্থিতি, দুশমন, বড় ফিতনা নির্ণয়, প্রয়োজনের দাবী ও চাহিদামতে ইসলামের ফরয দায়িত্ব আন্জাম দেয়া ভুলে গেছে ৷ তাই তারা আজ মানযিল ভোলা ও পথহারা হয়ে উম্মাহকে নিয়ে সেই হাবিয়ার পথে হাটছে, যে হাবিয়ার গর্তে পড়ে স্পেনের উলাম-তলাবা, বাগদাদের উলামা-তলাবা, বুখারা-সমরকন্দের উলামা-তলাবারা নিজেরা ধ্বংস হয়েছে আর সাথে ধ্বংস করেছে তিনটি জিনিস :
১. ইসলাম
২. মুসলিম জাতি
৩. মুসলিম দেশ
চিত্র ০১ :স্পেন;
স্পেনের যখন পতন হচ্ছিল, তখন সেখানকার আলেমগণ প্রায় ১৭টি বিষয় নিয়ে ইখতেলাফে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এর মাঝে ছিল মৌসুমি ঝগড়া তারাবিহ ৮ রাকআত নাকি ২০ রাকআত। রমযান শেষ ঝগড়া শেষ, এমনি আরেকটি মৌসুমি ঝগড়া হল,ঈদের অতিরিক্ত তাকবির সংখ্যা। (এসব ঝগড়া করতে কোন গবেষণা লাগেনা বরং একবার লেখা-বলা বক্তব্যই নিজে বা নিজ দলের অন্য কেউ প্রতি বছর চর্বিত চর্বন করে প্রতি মৌসুমে বমি করতে থাকে৷ আর রহমতের পরিবেশকে হিংসা, গীবত, পরনিন্দা ও কুৎসা রটনার দুর্গন্ধে দুষিত করে তোলে ৷
ইবাদতের মাসকে ঝগড়া-বিবাদ ও কাঁদাছোড়াছুডি়র মাসে পরিবর্তন করে ফেলে, এই অনর্থক-শয়তানি কাজের চর্চাতেই এক সময় রমযান ব্যথিত হয়ে বিদায় নিয়ে যায় আর আমরা সেই পুর্বের হতভাগা হয়েই রয়ে যাই ৷
যার দরুন রমযান আসে রমযান যায় কিন্তু রমযান দ্বারা আমাদের পুর্বের হিংসা-বিদ্ধেষ, পরনিন্দা,গীবত, কুৎসা রটনা, ঝগড়া-বিবাদ, গালাগালি, কাঁদাছোডাছুড়ি, প্রতিহিংসা, জিঘাংসার, মনোভাব ও আখলাকের কোনই হেরফের হয় না।
মিলাদ-কিয়াম সুন্নত নাকি বিদাত?
রাফে ইয়াদাইন নফল নাকি সুন্নাহ; নাকি নাজায়েজ ? 
আসহাবে কাহাফের কুকুরের রং কালো ছিল নাকি সাদা ছিল ?
এ সবই ছিল স্পেনের ঐ সময়কার উলামা, তলাবাদের দরস, লেখালেখি, ওয়াজ, বয়ান, বক্তৃতা ও মুনাযারা, খানকা, ধর্মীয় পত্রিকার প্রধান খাদ্য ও আলোচ্য বিষয় ৷
আজকে বাংলাদেশের ওয়াজ মাহফিল,দরস-তাদরিস, খানকা, রাজনীতির অংগন, ধর্মীয লেখালেখির দিকে তাকান, দেখবেন প্রতিটি ধর্মীয় গ্রুপের নিজেদের পবিত্রতা-আহলে সুন্নত আর জান্নাতের সার্টিফিকেট প্রদানের ফতোয়া ও মহড়া ৷
 
আর বিপক্ষের মুসলিম ও গ্রুপকে কাফের-গোমরাহ-বিদাতী- আহলে সুন্নত হতে খারিজ- জাহান্নামী ফতোয়ার বোমা, গোলা-বারুদ, কামান, শেল ও গ্রেনেড নিক্ষেপের মহড়া চলছে ওয়াজ মাহফিলে-দরস তাদরিসে ও লেখালেখিতে।
 
এক গ্রুপের হাতে আরেক গ্রুপের মুসলিমের জান-মাল ও ইজ্জত কোন কিছুই নিরাপদ নয়, কিন্তু সকল গ্রুপের হাতেই এদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, কাদিয়ানী ও নাস্তিক নিরাপদ।প্রতিটি ধর্মীয় গ্রুপ বলে, এরা যিম্মি আর ইসলামে যিম্মিদের হক আদায়ের নির্দেশ আছে।তাই বিভিন্ন বিপর্যয়ে প্রতিটি ধর্মীয় গ্রুপ তাদের পাশে দাড়ায়, সাহায্য-সহযোগিতা করে, তাদের উপাসনালয় পাহারা দেয়।
 
কিন্তু কোন ধর্মীয় গ্রুপকেই আপনি পাবেন না অন্য ধর্মীয় গ্রুপের বিপদ ও বিপর্যয়ে পাশে দাড়াতে, সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়াতে, বাড়িঘর-প্রতিষ্ঠান পাহারা দিতে বরং এক ধর্মীয় গ্রুপের বিপদে অন্য ধর্মীয় গ্রুপের মুখে আপনি দেখতে পাবেন কুৎসিত কদাকর জাহান্নামী দাজ্জালের দানবীয় অট্টহাসি, ধ্বংসের কামনা, ধ্বংস করতে নাস্তিক-কাফের ও ধর্মনিরপেক্ষদেরকে সার্বিক সাহায্য-সহযোগিতা। ধ্বংস হলে মহানন্দ-খুশি, আনন্দ-উল্লাস, আলহামদুলিল্লাহ পাঠ ও মিস্টি বিতরণ ৷
 
আর যদি ধ্বংস না হয় বা বিপদ হতে মুক্তি পায় তাহলে দেখবেন বিপক্ষের ধর্মীয় গ্রুপের আফসোস আর আফসোস ৷ আপনি তাদের মুখে গালিসহ শুনতে পাবেন:”আল্লাহ কি এই শালাকে দেখেনা ? শুয়োরের বাচ্চা বেচে গেল? শালার ঐ রকম, এই রকম মরণ হওয়া দরকার ছিল, শালা কাদিয়ানীর চেয়েও খারাপ” ইত্যাদি হরেক রকমের গালি, লানত, বদ-দোয়া, বদ ধারণা অন্য গ্রুপের মুসলিমের প্রতি ৷
 
অথচ সে নিজে একটি ইসলামী দলের সদস্য, খিলাফত কায়েমের দাবিদার, নিজেকে নিজের দলনেতা, পীর ও মুরুব্বী দলকে দাবী করে পুত-পবিত্র আর তাদের অন্তরের ভিতরে কি ঘৃনার আগুন লালন করে?, মাথার মধ্যে কি জঘন্য বদ পরিকল্পনা করে রাখে বিপক্ষের ধর্মীয় মুসলিম ভাই সম্পর্কে ৷
 
এদের কিতাবে লেখা আছে, যিম্মিকে দেখলে কুশল বিনিময়, মতবিনিময়, খোশগল্প করা যাবে, এক সাথে চা-নাশতা করা যাবে, তাদের সব হুকুক দিতে হবে ৷ 
 
আর বিপক্ষের মুসলিম (তার ভাষায়- ব্যাখ্যায় গোমরাহ ও বিদাতী) কে দেখলে সালাম দেয়া যাবেনা, কারণ বিদাতীকে সালাম করলে ইসলাম ধ্বংস করা হয়, কিন্তু যিম্মি কাফেরের সাথে এর চেয়ে বেশি কিছু করলেও ইসলাম ধ্বংস হয়না ৷
 
তাই আপনি যিম্মি কাফের হলে এদের কাছে মানবিকতা পাবেন, কিন্তু মুসলিম হয়ে বিদাতী, গোমরাহ হয়েছেন তো আপনি এদের কাছে মানবিকতাটুকুও পাবেন না । এদের কাছে কাফের মর্যাদার জিনিস, মুসলিম ঘৃনার জিনিস।যিম্মি মেহমানের জিনিস, বিদাতী জাহান্নামের জিনিস৷
 
এই সব হল; বাংলাদেশের সকল হালকার মাদরাসা,উলামা-তলাবাদের ইসলাম! ইসলামী শিক্ষা-দীক্ষা! এদেশের প্রতিটি ধর্মীয গ্রুপ অন্য ধর্মীয় গ্রুপের ছায়া-নাম-গন্ধ পর্যন্ত সহ্য করতে পারেনা ৷ প্রত্যেকে অন্যকে চিরতরে বিনাশ করার দানবীয় নেশায় মত্ত ও উন্মাদ ৷ এরপরও যদি কেউ বলে ইসলাম ধ্বংস করে ফেরাউন, নমরুদ ও নাস্তিকরা। আমি বলব এ লোক পাগল, আমাদের মত জিঘাংসাপরায়ন দলীয় মুসলিম বা দলীয় আলেম থাকলে সে দেশে ইসলাম ধ্বংসের কাজ হতে শয়তান ও কাফেররা ছুটি কাটায়।
 
স্পেনের আলেমরা কেউ কাউকে চুলপরিমাণ ছাড় দিতে রাজি না। সবাই জয়ী হতে চায়। জায়গায় জায়গায় বাহাস আয়োজন হতে লাগল। কিতাবের গাট্টি নিয়ে সবাই বাহাসের জায়গায় উপস্থিত হতে থাকলেন। কোনো বাহাস হতো প্রাসাদে; আবার কোনোটি গাছতলায়। সেই গাছগুলো বটগাছ কি না ইতিহাসে পাইনি।
 
এসব বাহাসের উদ্দেশ্য একটাই, প্রতিপক্ষকে বিতর্কে হারানো, দাবানো ও দমানো। বিপক্ষের আলেম ও আওয়ামকে ঘায়েল করা, অপমানিত করা। নিজের দলকে সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে ফতোয়াবাজি, দলবাজি, ফেরকাবাজি, ফিতনাবাজি, শক্তিবাজি, বাহুবাজি, গালিবাজি, চাপাবাজি ও জালবাজি করে হলেও জিতানো ও বিজয় ঘোষণা করা ৷ নাউযুবিল্লাহ।
 
কিন্তু শেষপর্যন্ত কেউ বিজয়ী হতে পারেনি ৷ সবাই হেরে গিয়েছিল। আল্লাহ তাদের উভয় দলের উপর আযাব স্বরুপ যামানার বুখত নসর রাজা ফার্দিনান্ড ও রাণী ইসাবেলাকে চাপিয়ে দেন ৷ তারা দুজন উভয় গ্রুপের উলামা, তলাবা  ও আওয়ামকে জবাই করে, পুড়ে, পানি, নদী ও সাগরে ডুবিয়ে মেরে তাদের স্বপ্নের মুনাযারার পুথিবিদ্যা সহ ইসলামের সকল কিতাব ও  কুরআন-হাদিস বিনাশ করে ইসলাম ও মুসলিম জাতিকে খতম করে তাদের কামাই ফলাফল কডায়-গন্ডায় দুনিয়াতেই বুঝিয়ে দেয়। আর জাহান্নামের আযাব, আখেরাতের জন্য রয়ে যায়।
আর পরবর্তী প্রজন্মের আলেম, তলাবা ও আওয়ামকে শিক্ষা দেয় যে, জাতি-যামানা-পরিস্থিতির ফরয দায়িত্বে অবহেলা করলে কি ফল কপালে জোটে?, জাতি-দেশ-ইসলামের ভাগ্যে কি বিপর্যয় নেমে আসে ৷
 
অযোগ্য জাহেল আলেম, মুফতী, মুফাসসির, দায়ী, নেতা, পীর, মুরুব্বী, খতীব, বক্তা, মুনাযিরে আযম, খতিবুল উম্মাহ, খতিবে যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজিন, বাতিলের আতংকরা কিভাবে ইসলাম, মুসলিম জাতি, মুসলিম দেশে ধ্বংস , আযাব ও গযব টেনে আনে ৷
সাড়ে সাতশত বছরের মুসলিম শাসনকে এমনভাবে পিষে ফেলা হলো; সেখানে আজ পর্যন্ত আল্লাহ নাম উচ্চারণের মতো কেউ নেই।

 

পড়ুন:

  • ১. স্পেন পতনের ইতিহাস:আলী সল্লাবী
  • ২. আন্দালুসের ইতিহাস:রাগিব সারজানী
  • ৩. আবারাত:মুস্তফা লুতফী মানফালুতী
  • ৪. হাযিরাতুল আলামিল ইসলামী:আমির সাকিব
  • ৫. জাহানে দিদাহ:তকি উসমানি
  • ৬. মাযা খাসিরাল আলামু বিন হিতাতিল মুসলিমিন:নদভী
  • ৭. মুসলমানুকে উরুজ ওয়া যাওয়াল:সাঈদ আকবরাবাদী
 
চিত্র ০২ বাগদাদঃ
বাগদাদ, খেলাফতের রাজধানী। তাতাররা ধেয়ে আসছে সাইক্লোনের চেয়েও দ্রুতগতিতে। যেদিকে যাচ্ছে সেদিকে বিরানভূমি করে ছাড়ছে। বাতাসে লাশের গন্ধ। হাঁটতে লাশ মাড়িয়ে হাঁটতে হয়। কবর খোড়ার মানুষ নেই। নারীরা গণহারে ধর্ষিত হচ্ছে। শিশুদের টুকরো টুকরো করে মা-বাবার মুখে দেওয়া হচ্ছে। সম্মানিত ব্যক্তিদের অঙ্গ কেটে তাদেরই মুখে পুরে দেওয়া হচ্ছে। বাগদাদের আকাশে পাখি উড়তে পারেনা আগুন ও ধোয়ার কুন্ডলির কারণে। নদীর পানি লাল হয়ে যাচ্ছে লাশের রক্তে। আবার নদীর পানি কালো হয়ে যাচ্ছে কিতাবের কালো কালির রংঙ্গে ৷
 
এই পরিস্থিতি বিপর্যয়ের আগমুহুর্তে সেখানকার আলেমগণ নিজেদের মধ্যে ধর্মের সুন্নত-মুস্তাহাব বিষয়ে অনর্থক মুনাযারা বিতর্কে লিপ্ত ছিল ৷ তাতারদের ফিতনা মোকাবেলা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় তাদের নেই। কে আসল আর কে গেল সেটা দেখার সময় তাদের নেই। দেশ কীভাবে চলছে, কারা চালাচ্ছে; এসব নিয়েও ভাবার সময় তাদের নেই।
 
সে সময় আলেমগণ কাকের মাংস হালাল নাকি হারাম তা নিয়ে জায়গায় জায়গায় বাহাস করছিলেন। মিলাদ সুন্নাত নাকি নফল তা নিয়েও নাকি বিতর্কসভা করছিলেন।
যেমনটি চলছে আজ আমাদের বাংলাদেশে;
 
  • ০১. রামগতিতে আহলে হাদিস-হানাফি মুনাযারা।
  • ০২. যাত্রাবাড়িতে মিলাদ-কিয়ামের মুনাযারা, আব্বাসি বনাম অমুক মুফতী-শায়খুল হাদিস ৷
  • ০৩. নুর-মাটির মুনাযারা,মাও নুরুল ইসলাম বনাম রেজবী ৷
  • ০৪. যশোরে আহলে হাদিস-হানাফি মুনাযারা, ফরায়েজি বনাম মুযাফফর ৷
  • ০৫. তারাবীর হাদিয়ার মুনাযারা, চিশতি বনাম অমুক মুফতি শায়খুল হাদিস ৷
  • ০৬. জোরে যিকির মুনাযারা,মাও নুরুল ইসলাম বনাম অমুক পীর ৷
  • ০৭. টাই মুনাযারা,অমুক বনাম অমুক।
  • ০৮. রংপুরে সম্মিলিত দোয়ার মুনাযারা,আকরামুজ্জামান সালাফি আহলে হাদিস বনাম হানাফি উলামা।
  • ০৯. মালিবাগ জামে মসজিদের মুনাযারা,আহলে হাদিস বনাম হানাফি।
  • ১০. উত্তরখানের মুবাহাসা,আহলে হাদিস বনাম হানাফি তাহমিদ।
  • ১১. উত্তরবঙ্গে মুনাযারা আহলে হাদিস বনাম শফি হানাফি।
  • ১২. অমুক মুনাযারা আহলে হাদিস বনাম রিজওয়ান, ইত্যাদি ইত্যাদি।
  • ১৩. অমুকের বিরুদ্ধে অমুক আব্দুর রাজ্জাক বা ওরে বাটপার বা ওরে চিটারের গালি ও হুমকি-ধমকি।
 
এসব মুনাযারায় গাট্টি গাট্ট কিতাব নিয়ে যাওয়া হয়, টুল-টেবিলে টালি-টালি কিতাব রেখে শুরু হয় এক মুসলিম আরেক মুসলিমকে ঘায়েল করা, পরাজিত করার এক জঘন্য খেল-তামাশা৷ উভয় গ্রুপের দোহাই কুরআন-সুন্নাহ, হাদিস, ফিকাহ ও শরীয়ত ৷ সাইনবোর্ড মাসয়ালা ৷
 
ক্বারী তায়্যিব রহ. এর ভাষায় বলতে হয়; মাসয়ালাকে সাইনবোর্ড বানিয়ে ভিতরের আগুন বের করা। বাগদাদের এসব বিতর্কেও কেউ বিজয়ী হতে পারেননি। হবার কথাও না। এসবে জয়ী হওয়া যায় না। আছে শুধু হার। সেই হার দুজনের, দুই দলের হার তাতারিদের পদতলে।লানতের বিজয়, আযাবের বিজয়, ধ্বংসের বিজয়। জলে স্থলে যত বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ছে, তার সবই মানুষের কামাই ৷ (আল-কুরআন)
ওই দুই জায়গার তখনকার আলেমদের অবস্থা, রুচি ও মেযাজের কঠোরতা, চিন্তার বন্ধ্যাত্বতা, গবেষণার দৈন্যতা, অন্তরের সংকির্ণ হীনমন্যতা, কর্ম পদ্ধতির অবাস্তবতা, কাজের অসংগতি, পরিকল্পনার অগভিরতা, লক্ষ্যের ভ্রষ্টতা, উদ্দেশ্যের ভ্রান্তি, কথা, লেখা-পড়া, ভাবনার এক ঘেয়েমি, এক পাক্ষিকতা, ব্যক্তি দলের অন্যায় পক্ষপাতিত্বতা, আছাবিয়্যাত, জাহালত ও জাহেলিয়াতের গভীরতার সঙ্গে আমাদের বর্তমান আলেমদের অমিল কতটুকু?
শেষ পর্যন্ত তাতাররা এলো। গণহারে হত্যা শুরু করল। হত্যা করতে করতে তাদের হাতিয়ার নষ্ট হয়ে গেলে; হত্যার বাকি ১০০ জন থাকলেও তাদেরকে মাটিতে মুখ গুজে শুয়ে থাকার নির্দেশ দিয়ে নতুন অস্ত্র আনতে চলে যেত। এই একজন তাতার সৈন্যকে ১০০ জন মুসলিম প্রতিরোধ করার সাহস পায়নি; অনুভূতি হয়নি। সেই তাতার সৈন্যটি ১০০ জন লোককে যেভাবে রেখে গিয়েছিল, ঘর হতে নতুন অস্ত্র নিয়ে ফিরে এসে দেখে এদেরকে যেভাবে রেখে গেছে, সেভাবেই মাটিতে মুখ গুজে শুয়ে আছে। সে এবার একজন একজন করে এই ১০০ জনকেই হত্যা করল। সবাই নিজেদের খুনে গোসল করল।
 
তখনকার অবস্থা আর এখনকার অবস্থা কি খুব বেমিল দেখছেন ?
পড়ুন:
 
১. কিচ্ছাতুত তাতার:আলি সাল্লাবী
২. আত-তাতার:রাগিব সারজানি
৩. আল-হুরুবুস সালিবিয়্যাহ:সল্লাবী
৪. জাহানে দিদাহ
৫. মাযা খাসিরাল আলামু
৬. মুসলমানুকে উরুজ
৭. বাগদাদের ঈগল
চিত্র ০৩ বুখারা-সমরকন্দঃ
ঐ দেশ-জাতি ধ্বংসের আগে সেখানকার উলামারা মুনাযারা-বহস করতে ছিলো, ওযুর কনুই হতে নিচের দিকে ঢালা সুন্নত নাকি কবজি হতে কনুই দিকে দেয়া সুন্নত?
 
পড়ুন:
 
১. আধার রাতের বন্দিনি সহ
২. বুখারা- সমরকন্দের ইতিহাস
৩. বুখারায় কমিউনিস্ট শাসনামলে ইসলাম
৪. মধ্য এশিয়ায় ইসলামের ইতিহাস

এখানে মন্তব্য করুন

লেখক পরিচিতি

নামঃ নাজমুল হুদা নুমানী
মক্তব-নাহবেমীরঃ ১৯৯৬ – ২০০০ শিক্ষাবর্ষ, দারুল উলুম আলিমপুর, সিরাজগঞ্জ।
হেদায়াতুন্নাহুঃ ২০০১ শিক্ষাবর্ষ, যাত্রাবাড়ী মাদরাসা।
কাফিয়া-দাওরাঃ ২০০২-২০০৬ শিক্ষাবর্ষ, লালবাগ মাদরাসা।
উচ্চতর আরবী সাহিত্যঃ ২০০৬-২০০৮ শিক্ষাবর্ষ , দারুল মারিফ, চট্টগ্রাম।
উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণাঃ (মুফতী) ২০০৮-২০১০ শিক্ষাবর্ষ, যাত্রাবাড়ী মাদরাসা।
উচ্চতর হাদীস গবেষণাঃ (মুহাদ্দিস) ২০১০-২০১২ শিক্ষাবর্ষ, বসুন্ধরা মাদরাসা।
সংক্ষিপ্ত তাফসিরঃ ২০০৪ রমজান মাস, খাদিমুল ইসলাম, মিরপুর-১৩, মুফতী ইমরান মাযহারি দা বা নিকট।
অনার্সঃ এশিয়ান ভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ। (চলমান)
কর্ম জীবনঃ ২০১২ শিক্ষাবর্ষ হতে অধ্যাবদি পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে দারুল ইফতার প্রধান মুফতির দায়িত্ব পালন;
এক. জামিয়ুল উলুম ইসলামিয়া, নিকড়া, দোহার, ঢাকা। (খন্ডকালিন প্রথম তিন মাস ইফতার প্রধান মুশরিফ)
দুই. মারকাযু হুজ্জাতিল ইসলাম, মাতুয়াইল, ঢাকা। (ইফতার প্রধান মুশরিফ) : ২০১২ এবং ২০১৩ শিক্ষাবর্ষ।
তিন. মারকাযুল কুরআন বাংলাদেশ, মৌচাক, নারায়ণগন্জ। ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ শিক্ষাবর্ষ, দারুল ইফতার প্রধান মুফতীর দায়িত্ব পালন।
চার. জামিয়া মাহমুদিয়া, মৌচাক, নারায়ণগন্জ, এক বছর ইফতার প্রধান মুফতীর দায়িত্ব পালন এবং শায়খুল হাদিস, জামিয়া মাহমুদিয়া, মৌচাক।
পাঁচ. মারকাযুল ফিকহ আল ইসলামী বাংলাদেশ, মৌচাক, নারায়ণগঞ্জ, ৩ বছর চলমান,  আল্লাহর রহমতে প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ও প্রধান মুফতী।
খলিফাঃ শাইখুল ইসলাম শাহ্ আহমাদ শফী দাঃ বাঃ
আমাদের অনুসরণ করুন

সর্বশেষ ইউটিউব ভিডিও

Play Video

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক পৃষ্ঠা