নৈতিকতা মানবজীবনের সকল দিক ও বিভাগকে নিয়ন্ত্রন করে। এজন্য ইসলাম মানবজীবনের সকল পর্যায়ে নৈতিকতার বিধানকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে। লেনদেনের ক্ষেত্রে সততা ও বিশ্বস্ততা রক্ষা করা ইসলামের মৌলিক শিক্ষাসমুহের অন্যতম। যে ব্যক্তি নিজের লেনদেন ও কথাবার্তায় সত্যবাদী ও বিশ^স্ত সেই প্রকৃত মুসলিম। ব্যবসায়-বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে ইসলাম ভালো ও কল্যাণকর বিষয়কে গ্রহণ এবং অকল্যাণকর যাবতীয় বিষয়কে পরিহার করার নির্দেশ প্রদান করেছে।
লেনদেনের ক্ষেত্রে ইসলামী নৈতিকতা

সূচিপত্র

লেনদেনের ক্ষেত্রে ইসলামী নৈতিকতা

নৈতিকতা মানবজীবনের সকল দিক ও বিভাগকে নিয়ন্ত্রন করে। এজন্য ইসলাম মানবজীবনের সকল পর্যায়ে নৈতিকতার বিধানকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে। লেনদেনের ক্ষেত্রে সততা ও বিশ্বস্ততা রক্ষা করা ইসলামের মৌলিক শিক্ষাসমুহের অন্যতম। যে ব্যক্তি নিজের লেনদেন ও কথাবার্তায় সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত সেই প্রকৃত মুসলিম। ব্যবসায়-বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে ইসলাম ভালো ও কল্যাণকর বিষয়কে গ্রহণ এবং অকল্যাণকর যাবতীয় বিষয়কে পরিহার করার নির্দেশ প্রদান করেছে।

লেনদেনের ক্ষেত্রে ইসলামের নৈতিক বিধান

ইসলামে পারস্পরিক লেনদেনের স্বচ্ছতা, বৈধতা ও যথার্থতা নিম্নোক্ত নীতিমালার উপর নির্ভরশীল,
১. ব্যবসায়-বাণিজ্যের বৈধতা যেহেতু পারস্পরিক সাহায্য সহযোগিতার উপর প্রতিষ্ঠিত। কাজেই বাণিজ্যিক ব্যাপারে উভয় পক্ষের সহযোগিতা অবশ্যই থাকতে হবে। মুনাফার ক্ষেত্রে একজনের বেশি মুনাফা এবং অপরজনের বেশি লোকসান, এমনটি যেন না হয় এদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয় উল্লেখ করে মহান আল্লাহ বলেন,

تَعَاوَنُوْا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوْا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ

“সৎকর্ম ও তাকওয়ার কাজে তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করবে এবং পাপ ও সীমা লংঘনে একে অন্যের সাহায্য করবে না।”
(সূরাহ মায়িদা: ৫:২)

২. লেনদেনের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি থাকা আবশ্যক। জোরপূর্বক সম্মতি আদায় করার অবকাশ নেই। এ ধরনের সম্মতি বৈধ বলে গণ্য হবে না।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

يَٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ ءَامَنُواْ لَا تَأۡكُلُوٓاْ أَمۡوَٰلَكُمْ بَيۡنَكُمْ بِٱلۡبَٰطِلِ إِلَّآ أَن تَكُوْنَ تِجَٰرَةً عَنْ تَرَاضٖ مِّنكُمۡۚ

“হে মু’মিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করবে না। কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হলে ব্যবসা করা বৈধ।”
(সূরাহ নিসা, ৪ : ২৯)

৩. চুক্তি সম্পাদনকারীদের মধ্যে ব্যবসার যোগ্যতা থাকতে হবে। অর্থাৎ তাকে বিবেক বুদ্ধিসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক ও স্বাধীন হতে হবে। অবুঝ, অপ্রাপ্তবয়স্ক ও পাগল হলে ব্যবসার চুক্তি সম্পাদন শুদ্ধ হবে না।
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,

رفـع الـقـلـم عـن ثـلـثـة عـن الـمـجـنـون الـمـغـلـوب حـتـى يـبـرأ و عـن الـنـائـم حـتـى يـسـتـيـقـظ و عـن الـصـبـى حـتـى يـحـتـلـم 

“তিন ব্যক্তির উপর শরী‘আতের নির্দেশ আরোপিত হবে না, পাগল যতক্ষণ না সে আরোগ্য লাভ করে, ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে ঘুম থেকে জাগ্রত হয় ও অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক যতক্ষণ না সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়।”
(সহীহ ইবনে খুজাইমা, খন্ড-৪, পৃ:৩৪৮, আল-মুসতাদরক, খন্ড-২, পৃ:৬৮, মাকতাবায়ে শামেলা)

৪. ব্যবসায় কোন প্রকার প্রতারণা, আত্মসাৎ, ক্ষতি ও পাপাচার উদ্দেশ্য থাকতে পারবে না। অর্থাৎ ইসলামী শরী‘আতে যেসব বস্তুুর কারবার হারাম, সে সবের ব্যবসা করা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,

افـضـل الـكـسـب بـيـع مـبـرور عـلـى الـرجـل بـيـده 

“উত্তম উপার্জন হচ্ছে যা কল্যাণকর বেচাকেনা (ব্যয়-এ মাবরূর) এবং তার নিজ হাতের উপার্জন।” আর ‘মাবরূর’ বেচাকেনা হচ্ছে, যাতে পারস্পরিক সহযোগিতা ও কল্যাণ নিহিত থাকে। এতে প্রতারণা, আত্মসাৎ ও আল্লাহ তা‘আলার নাফরমানী থাকবে না।
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,

لا ضـرر ولا ضـرار 

(নিজ) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং (অন্যকে) ক্ষতিগ্রস্ত করা উচিত নয় (অবৈধ)।
(মুয়াত্তা মালেক, খন্ড-৪, পৃ:১০৭৮, নাসবুর রায়, খন্ড-৬, পৃ:৩৭৪, মুসনাদে শাফেয়ী, পৃ:২২৪, মুসনাদে আহমাদ, খন্ড-৫, পৃ:৫৫,মাকতাবায়ে শামেলা)

৫. সম্পদ বাড়ানো এবং মুনাফা অর্জনের জন্য এরূপ লেনদেন করা, যাতে একজনের নির্ঘাত লোকসানের মাধ্যমে অপরের মুনাফা অর্জিত হয়। যেমন, জুয়া ও লটারী।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,

انـمـا الـخـمـر والـمـيـسـر والانـصـاب والازلام رجـس مـن عـمـل الـشـيـطـن فـاجـتـنـبـوه لـعـلـكـم تـفـلـحـون 

“নিশ্চয় সুদ, জুয়া, মূর্তি বেদী ও ভাগ্য নির্ণয়ক শর ঘৃণ্য বস্তুু শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর। তাহলে তোমরা সফলকাম হতে পারবে।”
(সূরাহ মায়িদা: ৫:৯০)

৬. মুনাফা অর্জন ও সম্পদ বৃদ্ধির যেসব ব্যবসা উভয় পক্ষের কোন এক পক্ষের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি পাওয়া যায়নি। বরং জবরদস্তিমূলক সম্মতিকে স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতির স্থলাভিষিক্ত ধরে নেয়া হয়েছে। যেমন, সুদের ব্যবসা বা শ্রমিককে তার শ্রমের তুলনায় কম পারিশ্রমিক প্রদান করা। এরূপ করা হারাম। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,

احـل الـلـه الـبـيـع و حـرم الـربـوا 

“আল্লাহ তা‘আলা বেচাকেনাকে বৈধ ও সুদকে অবৈধ করেছেন।”
(সূরাহ বাকারাহ, ২ : ২৭৫)

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,

نـهـى رسـول الـلـه صـلى الـلـه عـلـيـه و سـلـم عـن بـيـع الـمـلـمـضـطـر 

“রাসূলুল্লাহ সা. নিরূপায় ব্যক্তি থেকে কোন বস্তু খরিদ করতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ তার অনন্যোপায় অবস্থা থেকে অবৈধ ফায়দা গ্রহণ করা জায়িয নেই।”
শাহ ওয়ালী উল্লাহ রহ. জবরদস্তি সম্মতিকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

৭. এমন ব্যবসা করা যা ইসলামের দৃষ্টিতে পাপ অথবা এমন বস্তু ক্রয় করা যা মূলগত দিক থেকে অপবিত্র। যেমন, শরাব, মৃত বস্তু, প্রতিমা, শূকর ইত্যাদির ব্যবসা। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,

حـرمـت عـلـيـكـم الـمـيـتـة و الـدم و لـحـم الـخـنـزيـر

“তোমাদের জন্য হারাম হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত ও শূকর মাংস।”
(সূরাহ মায়িদা: ৫:৩)

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,

عـن جـابـر رضـى الـلـه عـنـه انـه سـمـع رسـول الـلـه صـلـى الـلـه عـلـيـه و سـلـم يـقـول ان الـلـه حـرم بـيـع الـخـمـر و الـمـيـتـة و الـخـنـزيـر و الاصـنـام

“জাবির রা. থেকে বর্ণিত তিনি শুনেছেন রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা মদ ও মাদক দ্রব্য, মৃত শূকর ও প্রতিমার বেচাকেনাকে হারাম করে দিয়েছেন।”
(সহীহ মুসলিম, কিতাবুল মুসাফাত, হাদীস নং-৩০৬১, https://hadithportal.com/)

৮. উভয় পক্ষের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পরও যেসব লেনদেনের কলহ বিবাদের আশংকা থাকে এবং যেসব লেনদেনে কোন এক পক্ষেরই ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, সেসব লেনদেন বৈধ নয়। যেমন পণ্য কিংবা মূল্য অথবা উভয়টি অস্পষ্ট রাখা। অথবা একটি লেনদেনকে দু’টি লেনদেনে পরিণত করা। যেমন বলা হল, যদি এটি নগদ টাকায় ক্রয় করা হয় তবে এর মূল্য একশত টাকা আর বাকীতে কিনলে দুইশত টাকা। অথবা বেচাকেনার মধ্যে এমন শর্ত আরোপ করা যা উক্ত লেনদেনের অংশ বা ররুন নয়। এসব লেনদেন পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবর্তে কলহ বিবাদেরই সৃষ্টি হয়ে থাকে।
এ প্রসঙ্গে রাসূলূল্লাহ সা. বলেন,

نـهـى رسـول الـلـه صـلى الـلـه عـلـيـه و سـلـم عـن بـيـع الـمـلامـسـة والـمـنـابـذة 

“রাসূলুল্লাহ সা. এক বেচাকেনাকে দুই বেচাকেনায় রূপান্তরিত করতে নিষেধ করেছেন।”
(সহীহ ইবনে হিব্বান, খন্ড-১১, পৃষ্ঠা-৩১৬, মুখতাসার সহীহ মুসলিম, পৃষ্ঠা-৩১২, সুনানে বায়হাকী কুবরা, খন্ড-৫, পৃষ্ঠা-৩৪১, মাকতাবায়ে শামেলা)
অপর এক হাদীসে আরো বর্ণিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ সা. বেচাকেনার সাথে (বাইয়ের) শর্ত আরোপ করতে নিষেধ করেছেন।
হাদীসে আরো বর্ণিত হয়েছে, ক্রয় বিক্রয়ের সময় যে পণ্য আমার নিকট নেই তা বেচাকেনা করতে রাসূলুল্লাহ সা. নিষেধ করেছেন।

৯. যেসব লেনদেনে ধোঁকা ও প্রতারণা নিহিত আছে, এ জাতীয় প্রতারণামূলক লেনদেন করতে রাসূলুল্লাহ সা. নিষেধ করেছেন। যেমন পাথরের টুকরা মিশিয়ে কোন বস্তু বেচাকেনা করা ইত্যাদি। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. পাথর নিক্ষেপ করে বেচাকেনা করতে এবং প্রতারণামূলক লেনদেন করতে নিষেধ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে রাসূলূল্লাহ সা. বলেন,

نـهـى رسـول الـلـه صـلى الـلـه عـلـيـه و سـلـم عـن بـيـع الـمـلامـسـة والـمـنـابـذة 

“রাসূলুল্লাহ সা. কোন বস্তু ছুঁয়ে দিয়ে বেচাকেনা করতে নিষেধ করেছেন।”
(সহীহ ইবনে হিব্বান, খন্ড-১১, পৃষ্ঠা-৩১৬, মুখতাসার সহীহ মুসলিম, পৃষ্ঠা-৩১২, সুনানে বায়হাকী কুবরা, খন্ড-৫, পৃষ্ঠা-৩৪১, মাকতাবায়ে শামেলা)

রাসূলূল্লাহ সা. আরো বলেন,

نـهـى رسـول الـلـه صـلى الـلـه عـلـيـه و سـلـم عـن بـيـع الـنـجـش

“রাসূলূল্লাহ সা. বলেন, লেনদেনে জালিয়াতি ও ফটকাবাজারী করতে নিষেধ করেছেন।”
(সহীহ বুখারী, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-৭০, মুখতাসার সহীহ মুসলিম, পৃষ্ঠা-৩১২, মুসনাদে আহমাদ, খন্ড-১০, পৃষ্ঠা-১০৪, মাকতাবায়ে শামেলা)

এসব লেনদেনের মধ্যে যেহেতু জুয়া অথবা ক্রেতা বিক্রেতার যেকোন একজনের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কিংবা তাদের পরস্পরের মেধ্য ঝগড়া বিবাদের সম্ভাবনা রয়েছে, এ জন্য এ জাতীয় লেনদেনকে ইসলাম বাতিল বলে ঘোষণা করেছে। রাসূলুাল্লাহ সা. (শহরবাসী লোকেদের) শহরের বাইরে গিয়ে বাণিজ্যিক কাফেলার সাথে সাক্ষাত করে লেনদেন করতে নিষেধ করেছেন। এ জাতীয় বেচাকেনার উদ্দেশ্য হচ্ছে শহরের লোকেদের থেকে চড়ামূল্য আদায় করা বা গ্রামের কৃষকদের থেকে সস্তা দামে খাদ্যশস্য খরিদ করা। লক্ষ্য হলো, অধিক মুনাফাখোরী। এ কারণে ইসলামে এ জাতীয় লেনদেন নিষিদ্ধ।

লেনদেনের ক্ষেত্রে নম্রতা অবলম্বন ও ইসলামী নৈতিকতা

আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সততা ও বিশ্বস্ততা রক্ষা করার পাশাপাশি বিষয়টিকে নেককাজ ও আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য লাভের উপায় হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়া করেছে, লেনদেনের ক্ষেত্রে নম্রতার নীতি অবলম্বন করা এবং কঠোরতা পরিহার করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,
“আল্লাহ তা‘আলার রহমত বর্ষিত হোক ঐ ব্যক্তির উপর যে বেচাকেনার মধ্যে এবং অন্যদের কাছ থেকে নিজের প্রাপ্য উসূল করার ক্ষেত্রে নম্র আচরণ অবলম্বন করে।”
রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কোন দরিদ্র বা অসহায় বান্দাকে (ঋণ আদায়ের ব্যাপারে) অতিরিক্ত সুযোগ প্রদান করে কিংবা (পূর্ণ/আংশিক পাওনা) ক্ষমা করে দেয় আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তাকে তার পেরেশানীসমূহ থেকে নাজাত দান করবেন।”
রাসূলুল্লাহ সা.আরো বলেন, “কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা এরূপ ব্যক্তিকে নিজের করুনার ছায়াতলে স্থান দিবেন।”
রাসূলুল্লাহ সা. এর এ সকল বাণীর সম্পর্ক হলো ব্যবসায়ী ও ধনবান শ্রেণির সাথে, যাদের নিকট থেকে গরীব ও অসহায় লোকেরা সাধারণতঃ নিজ নিজ প্রয়োজনে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। কিন্তুু যারা কারো নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করে অর্থাৎ গ্রহীতাদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সা. স্বতন্ত্রভাবে গভীর তাগিদ দিয়ে বলেন, যতটুকু তোমাদের দ্বারা সম্ভব অল্প সময়ের ভেতরে তোমরা নিজেদের ঋণ শোধ করার চেষ্টা করবে। এমন যেন না হয় যে, তুমি দুনিয়া ছেড়ে চলে যাচ্ছ, অথচ আল্লাহর এক বান্দার হক ও পাওনা তোমার উপর অবশিষ্ট রয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ সা. এহেন ঋণ গ্রহণকারীদের ব্যাপারে কঠোর বাণী উচ্চারণ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,

“যদি ঋণী ব্যক্তি আল্লাহর পথে শহীদ হয়, তাহলে শাহাদাতের ফযীলত ও বরকতে তার সকল গুনাহ মার্জনা করে দেয়া হয়। কিন্তু যদি তার উপর কারো ঋণ অবশিষ্ট থাকে তাহলে শহীদ হয়েও সে ঐ ঋণ হতে নিস্কৃতি পাবে না।”
রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেন, “সে মহান প্রতিপালকের পথে শপথ, যার কুদরতী হাতে মুহাম্মদ সা. এর জীবন; যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহর পথে শহীদ হয় তারপর তাকে জীবিত করা হয়, তারপর পুনরায় শহীদ হয়, তারপর তাকে জীবিত করা হয়, তারপরও সে শহীদ হয়। (অর্থাৎ জীবনে তিনবার শাহাদতের মর্যাদা লাভ করে তবুও) তার উপর যদি কারো পাওনা থেকে যায় (তা হলে ঋণের ফয়সালা হওয়ার পূর্বে) সে ব্যক্তি ও বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।”
অর্থ বিষয়ক লেনদেন ও বান্দার হক এর নাযুকতা অনুমানের জন্য বর্ণিত দু’টি হাদীসই যথেষ্ট। আ রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে তাওফীক দিন, আমরাও যেন বিষয়ে দু’টির গুরুত্ব ও নাযুকতা উপলব্ধি করতে সক্ষম হই এবং আমরা যেন সর্বদা এ ধরনের ঋণের বোঝা থেকে বেঁচে থাকতে পারি।

লেনদেনের ক্ষেত্রে কিছু অনৈতিক আচরণ

ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যদ্রব্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রায়ই মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে। বিশেষ করে এ যুগের ব্যবসায়ী মহল নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কল্পনাতীত মিথ্যার আশ্রয় নেয় তাকে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। ইসলাম এ ধরনের ব্যবসাকে অবৈধ বলে মন্তব্য করেছে। কেননা এ ধরনের ধোকা যখন ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে স্থান লাভ করে তখন অনর্থক ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “ক্রেতা এবং বিক্রেতা বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিজ নিজ এখতিয়ার থাকবে। এক্ষেত্রে যদি তারা কেউ স্বার্থসিদ্ধির নিমিত্ত মিথ্যার আশ্রয় নেয় তবে তার মাল হতে বরকত উঠে যাবে। মিথ্যা বিক্রয়ার্থে প্রতিজ্ঞা মালে ঘাটতি আনে এবং লাভ ধ্বংস করে দেয়।”
(আহমদ)

অনেক ক্রেতা অজ্ঞতাবশতঃ বিক্রেতাকে সত্যবাদী বলে বিশ্বাস করে থাকে। সুতরাং বিক্রেতার উচিত সে যেন হীন লাভের উদ্দেশ্যে ক্রেতার সরল বিশ্বাসের প্রতি প্রবঞ্চনা না করে। মালের কোন ত্রুটি থাকলে নিজেই যেন ক্রেতার নিকট প্রকাশ করে দেয়। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা হলো তোমার কোন ভাই তোমাকে সরল বিশ্বাস করল, অথচ তুমি তার সহিত মিথ্যা কথা বলছ।”
(বুখারী শরীফ)

রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “পণ্য দ্রব্যের মধ্যে কোন ত্রুটি থাকলে তা না জানিয়ে বিক্রয় করা কোন বিক্রেতার জন্যই জায়েজ নহে।”
(বুখারী শরীফ)

ইবনে আবী আওফা হতে বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি বাজারে কিছুমাল বিক্রয় করতে এনেছিল। সে কসম করে বলল যে, সে এমন মাল বিক্রয় করতে এনেছে যা কোন লোকেই আনতে পারেনি। সে ক্রেতাকে ফাঁদে ফেলার জন্যই এরূপ বলেছিল।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

ان الـذيـن يـشـتـرون بـعـهـد الـلـه و ايـمـانـهـم تـمـنـا قـلـيـلا اولـئـك لا خـلاق لـهـم فـى الاخـرة ولا يـكـلـمـهـم الـلـه ولا يـنـظـر الـيـهـم يـوم الـقـيـامـة ولا يـزكـيـهـم و لـهـم عـذاب الـيـم

‘‘যারা আল্লাহর শপথ ও কসমের বিনিময়ে সামান্য মূল্য অর্জন করে, আখেরাতে তারা কিছুই লাভ করবে না। আল্লাহ তাদের সাথে কিয়ামতের দিন কোন কথা বলবেন না এবং তাদের প্রতি দৃষ্টিপাতও করবেন না।’’ আল্লাহ তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন না । উপরন্তু তাদের জন্য কঠিন শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে।”
(সূরা আলে-ইমরান, আয়াত-৭৭ )

ব্যবসায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ধোঁকা ও প্রতারণার অশ্রয় গ্রহণকারীদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “যে ব্যক্তি ধোঁকাবাজী করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। ধোঁকা ও প্রবঞ্চনা ব্যক্তিকে দোযখের দিকে ঠেলে দেয়।”
উপরোক্ত হাদীস সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, “একদা রাসূলুল্লাহ সা. মদীনার বাজারে গিয়ে দেখলেন জনৈক দোকানী বিক্রি করার উদ্দেশ্যে শষ্যের স্তুপ দিয়ে রেখেছে। স্তুপের উপরিভাগে শষ্যগুলো ছিল শুকনা আর ভিতর ভাগের শষ্যগুলো ছিল ভেজা। তখন রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, এহেন ধোঁকাবাজ মানুষ আমাদের দল বহির্ভূত।”
কাজেই যে দোকানী প্রতারণামূলকভাবে গ্রাহকদেরকে উৎকৃষ্ট নমুনা দেখায় অথচ তার মাল নিকৃষ্ট যে ব্যক্তি মালের ত্রুটি অপ্রকাশিত অবস্থায় রাখে সে মহানবীর উপরোক্ত হাদীসের আলোকে সত্যবাদী হিসাবে গণ্য নয়।
অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “যে ব্যক্তি (জেনে শুনে) কোন ত্রুটিযুক্ত ও নষ্ট দ্রব্য কারো নিকট বিক্রি করে অথচ গ্রাহকের মালের ত্রুটি সর্ম্পকে অবগত করেনি সে সর্বদা আল্লাহর ক্রোধে নিপতিত থাকবে।”
রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেন, ”সে ব্যক্তির উপর সর্বদা ফিরেশতাদের অভিশাপ বর্ষিত হতে থাকে।”

মোদ্দাকথা; ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী ব্যবসায় বাণিজ্য ও কাজ কারবারের ক্ষেত্রে সব ধরনের ধোঁকাবাজী ও জালিয়াতী নিষিদ্ধ ও অভিশপ্ত কর্ম। রাসূলুল্লাহ সা. এহেন কর্মে জড়িত লোকেদেরকে ইসলাম থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন সম্পর্কহীন বলে ঘোষণা দিয়েছেন এবং তাদেরকে এ উম্মতের বহির্ভূত বলে মত প্রকাশ করেছেন।
অনুরূপভাবে সুদ ও ঘুষের লেনদেন। যদিও উভয় পক্ষের সম্মতি পূর্বক এ লেনদেন সম্পাদিত হয় তবুও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ও হারাম। হাদীসে এ পযার্য়ের লেনদেনকারীদেরকে অভিশপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
সুদ সম্পর্কে একটি সুপ্রসিদ্ধ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘‘আল্লাহর অভিশাপ সুদ গ্রহণকারী, সুদ প্রদানকারী, সুদের হিসাব লেখক এবং সুদের বিষয়ে সাক্ষ্যদাতা সকলের উপর।”

অনুরূপভাবে ঘুষ সম্পর্কে ঘোষিত হয়েছে, ‘ঘুষ দাতা ও ঘুষগ্রহীতার উপর রাসূলুল্লাহ সা. অভিশাপ বর্ষণ করেছেন।’’
রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেন, “কেউ যদি কারো জন্য কোন বিষয়ে সুপারিশ করে তারপর সে ব্যক্তি সুপারিশকারীর জন্য কোন হাদিয়া প্রেরণ করে আর সুপারিশকারী সে হাদিয়া গ্রহণ করে তা হলে এটিও একটি মারাত্মক গুনাহ। (যেন এ হাদিয়া এক ধরনের ঘুষ কিংবা এক ধরনের সুদ বলে বিবেচিত)।”
ঘুষ ও সুদের লেনদেন ব্যবসায়ে প্রতারণা ও বেঈমানী এ সব কিছু ইসলামে সমানভাবে নিষিদ্ধ ও হারাম। এ সবের চেয়ে আরো মারাত্মক পর্যায়ের হারাম হল মিথ্যা মামলা চালানোর মাধ্যমে নেহায়েত জোর জবরদস্তিমূলকভাবে কারো কোন জিনিষ আত্মসাৎ করে নেয়া।
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারো ভূ-সম্পত্তির সামান্য পরিমাণও দখল করে নেয় কিয়ামতের দিবসে (তার জন্য যে শাস্তি নির্ধারিত হবে সেটি হল) দখলকৃত ভূমি খন্ডের মধ্যে তাকে এমন জোরে প্রোথিত করে দেয়া হবে যে, সে ভূতলের সর্বনিম্ন পর্যায় পর্যন্ত গড়িয়ে যাবে।”

রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেন, “যে ব্যক্তি বিচারকের দরবারে মিথ্যা শপথের আশ্রয় নিয়ে কোন মুসলিমের কোন সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে, আল্লাহ তা‘আলা সে ব্যক্তির উপর দোযখের আগুন অবশ্যম্ভাবী এবং বেহেশত তার জন্য হারাম করে দেন। কথাটি শুনে জনৈক সাহাবী বললেন ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে জিনিসটি সাধারণ বা তুচ্ছ কোনকিছু হলেও? মহানবী বললেন, যদিও তা বন্য মিসওয়াক গাছের একটি ডালই হয় না কেন।”
অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. জনৈক মামলাবাজ লোককে সর্তক করে বলেন, “মনে রেখ, কেউ যদি মিথ্যা কসম করে অন্যায়ভাবে কারো সামান্য কোন সম্পদও গ্রাস করে তবে কিয়ামত দিবসে সে আল্লাহর সামনে কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত অবস্থায় উপস্থিত হবে।”
রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেন, “যে ব্যক্তি এমন কোন জিনিসের ব্যাপারে নিজের মালিকানার দাবী উত্থাপন করে যা বস্তুতঃ তার নয়, সে আমাদের দলভূক্ত নয়। সে যেন দোযখকে তার ঠিকানা ও আবাস বানিয়ে নেয়।”
মিথ্যা সাক্ষ্যদান প্রসঙ্গে এক হাদীসে আছে; “একদা মহানবী সা. ফজরের নামায শেষে দাঁড়িয়ে গেলেন, তারপর একটি বিশেষ ভঙ্গিতে নিম্নোক্ত কথা তিনবার বললেন, মিথ্যা সাক্ষ্যদানের অপরাধ শিরকের অপরাধ সমতুল্য সাব্যস্ত করা হয়েছে।”

অবৈধ লেনদেনের পরিণাম

ধন সম্পদ অর্জন করার ব্যাপারে পূর্বে যে সকল অবৈধ ও নিষিদ্ধ উপকরণের কথা আলোচিত হয়েছে, সে সব পন্থায় যে সম্পদই অর্জিত হোক না কেন তা হারাম ও নাপাক বলে বিবেচিত হবে। আর যে ব্যক্তি এ হারাম মাল নিজের পানাহারের কাজে ব্যয় করবে রাসূলুল্লাহ সা.এর বাণী মোতাবেক সে ব্যক্তির সাওম, সালাত কবুল হবে না। তার কোন দু‘আও গ্রহণযোগ্য হবে না। এমন কি সে ব্যক্তি যদি এ অবৈধ সম্পদের দ্বারা কোন নেককাজ পর্যন্ত করে তবে তাও আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য নয়। সর্বপোরি সে ব্যক্তি পরকালে আল্লাহর বিশেষ রহমত থেকে বঞ্চিত থাকবে।
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “কোন ব্যক্তি যদি অবৈধ পন্থায় হারাম মাল লাভ করে সদকা করে তবে এ সদকা গ্রহণযোগ্য নয়। এভাবে যদি তা থেকে নিজের প্রয়োজনে সে কিছু খরচ করে তবে তাতেও কোন বরকত থাকবে না। যদি সে হারাম মাল ত্যাজ্য সম্পদ হিসেবে রেখে যায় তাহলে তার দোযখের ইন্ধন বিবেচিত হওয়ার জন্য এটা যথেষ্ট। মনে রেখ, আল্লাহ কখনো মন্দকর্মকে মন্দকর্মের দ্বারা পরিচ্ছন্ন করেন না। (অর্থাৎ হারাম মালের সদকা কারো গুনাহ ও পাপ মোচনের উপকরণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।) বরং তিনি মন্দকর্ম সৎকর্ম এর দ্বারা পরিচ্ছন্ন করে থাকেন। কেননা কোন নাপাক অপর নাপাককে নিঃশেষ করে তাকে পবিত্র বানাতে পারে না।”

রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেন, আল্লাহ স্বয়ং পবিত্র এবং তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তুকেই কবুল করে থাকেন। হাদীসটির শেষাংশে তিনি জনৈক ব্যক্তির অবস্থা আলোচনা করে বলেন, এক ব্যক্তি অতিদূর পথে সফর করে দু‘আ করার জন্য কোন পবিত্র স্থানে এমন অবস্থায় এসে পৌঁছাল যে, মাথার চুলগুলো তার উসকু খসকু অবস্থায় আছে এবং শরীর তার ধূলায় ধুসরিত। আর সে আসমানের দিকে হস্তদ্বয় উত্তোলন করে অতিশয় বিনয়ের সঙ্গে দু‘আ করে বলছে, হে আমার প্রভূ ! হে আমার প্রতিপালক ! কিন্তু তার খাদ্য হারাম, পানীয় বস্তু হারাম, লেবাস পোষাকও হারাম মাল থেকে এবং হারাম মালের দ্বারাই তার জীবন লালিত। এমতাবস্থায় এ ব্যক্তির দু‘আ কেমন করে কবুল করা হবে। অর্থ হল, যখন কোন ব্যক্তির পানাহার, পোষাক পরিচ্ছদ হারাম ও অবৈধ সম্পদ থেকে হয়, তখন তার মধ্যে আর দু‘আ কবুল হওয়ার যোগ্যতা অবশিষ্ট থাকে না। অপর হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “কোন ব্যক্তি যদি একটি কাপড় দশ টাকায় ক্রয় করে, আর এ দশ টাকার মধ্যে কেবল একটি টাকা অবৈধ পন্থায় এসে থাকে, তাহলে যতক্ষণ পর্যন্ত এ কাপড় ঐ ব্যক্তির শরীরে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার কোন সালাত কবুল হবে না।”
রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেন, “যে দেহ অবৈধ সম্পদের দ্বারা লালিত পালিত সে দেহ বেহেশতে প্রবেশ করবে না।”

পরিশেষে বলতে চাই-
নৈতিকতা সংরক্ষণে ইসলামী নীতিমালার অন্যতম দিক আর্থিক লেনদেন ও কারবারের ক্ষেত্রে সততা ও সচ্ছতা রক্ষা করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। ইসলাম প্রবর্তিত বৈধ লেনদেন সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান সোপান। এটি ব্যক্তি জীবনে সম্পর্ক গড়ার ও সুদৃঢ় রাখার এক বিশেষ উপায়। এজন্য আমাদেরকে দৃঢ়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, পৃথিবীতে কষ্ট ক্লেশের সম্মুখীন হলেও আমরা কখনো যেন কোন অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জনের চেষ্টা না করি। বরং হালাল আমদানী ও আয়ের উপরই আমাদেরকে সর্বদা সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

এখানে মন্তব্য করুন

লেখক পরিচিতি

নামঃ ড. ফেরদৌস আলম ছিদ্দিকী।
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ
বি. এ (অনার্স), (১৯৯৮ শিক্ষাবর্ষ),
এম. এ, (১৯৯৯ শিক্ষাবর্ষ),
পিএইচ.ডি, (২০০৬ শিক্ষাবর্ষ),
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
পেশাঃ সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০১৭১৮ -৫৭৭১২২
ই-মেইলঃ dfas122@gmail.com

আমাদের অনুসরণ করুন

সর্বশেষ ইউটিউব ভিডিও

Play Video

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক পৃষ্ঠা