স্কাইভিউ পার্ক সিটি
শান্তিনগর, ঢাকা-১২১৭
+৮৮০২-৪১০৩২৩৫৩
২৪/৭ গ্রাহক সেবা
admin@islami-sharia.org
আমাদের কাছে বার্তা পাঠান
শান্তিনগর, ঢাকা-১২১৭
২৪/৭ গ্রাহক সেবা
আমাদের কাছে বার্তা পাঠান
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মাওলানা সালমান হুসাইন (গোপালগঞ্জ)
রমজান মাস মুমীনদের জন্য অত্যন্ত বরকত এ ফলিজতের মাস। তাই এ মাসে প্রতিটি মুমীন মুসলমান নিজের গোনাহ মাফ করানো ও জান্নাত পাওয়ার আশায় সিয়াম (রোযা) পালন করে। রমযান মাসের পর চন্দ্র বছরের হিসাব অনুযায়ী শাওয়াল মাস। এ মাসের শুরুতেই বান্দার খুশির জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মেহমানদারী হিসেবে ঈদের দিন রেখেছেন এবং উক্ত দিনে রোযা রাখা নিষিদ্ধ করেছেন। ঈদের দিন ছাড়াও এ মাসে মুমিন মুসলিম রোজাদারের জন্য বিশেষ ফজিলত ঘোষণা করেছেন।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ
عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأنْصَارِيِّ، – رضى الله عنه – أَنَّهُ حَدَّثَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ “
আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; যে ব্যক্তি রমযানের সওমব্রত পালনের পর শাওয়ালের ৬টি সওম পালন করল, (পুণ্যের দিক দিয়ে) পূর্ণ একটি বছর সওম পালন করল।
(মুসলিম-১১৬৪, তিরমিয়ী-৭৫৯, আবূ দাউদ-২৪৩৩, ইবনু মাজাহ-১৭১৬, আহমাদ-২৩০২২, বুলুগুল মারাম, হাদিস নং- ৬৮১)
অন্য এক বর্ণনায় এসেছেঃ
قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ
فَذَلِكَ صِيَامُ الدَّهْرِ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَثَوْبَانَ .قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي أَيُّوبَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدِ اسْتَحَبَّ قَوْمٌ صِيَامَ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ هُوَ حَسَنٌ هُوَ مِثْلُ صِيَامِ ثَلاثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ . قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَيُرْوَى فِي بَعْضِ الْحَدِيثِ وَيُلْحَقُ هَذَا الصِّيَامُ بِرَمَضَانَ وَاخْتَارَ ابْنُ الْمُبَارَكِ أَنْ تَكُونَ سِتَّةَ أَيَّامٍ فِي أَوَّلِ الشَّهْرِ . وَقَ عَنِ الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ قَالَ كَانَ إِذَا ذُكِرَ عِنْدَهُ صِيَامُ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ فَيَقُولُ وَاللَّهِ لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ بِصِيَامِ هَذَا الشَّهْرِ عَنِ السَّنَةِ كُلِّهَا .
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক রমযান মাসে রোযা পালন করলো, তারপর শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করলো, সে লোক যেন সম্পূর্ণ বছরই রোযা পালন করলো।
(সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং ৭৫৯, সুনানে ইবনু মা-জাহ (১৭১৬), মুসলিম২৬৪৮)
নোটঃ
জাবির, আবূ হুরায়রা ও সাওবান (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ আইয়ূব (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম এই হাদীসের ভিত্তিতে শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করাকে মুস্তাহাব মনে করেন। হাসান বাসরী হতে বর্ণিত আছে যে, তার নিকট শাওয়ালের ছয়টি রোযার উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ তিনি পূর্ণ বৎসরের পরিবর্তে এই মাসের রোযার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
(সনদ সহীহ্ ,সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং ৭৫৯)
উপরোক্ত হাদিসের মাধ্যমে শাওয়ালের ছয় রোযার ফজিলতের বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রতিটি রোজাদারের জন্য এই রোযা রাখার ব্যপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই রোযার রাখার সময় হলো পুরো মাসের মধ্যে (ঈদের দিন ব্যতীত) যেকোন ছয়দিন রাখা যাবে। এ রোযা যেমনিভাবে ধারাবাহিকভাবে রাখা যায় ঠিক তেমনিভাবে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ও রাখা যায়।
কেননা হাদীস শরীফে হযরত দাউদ আলাইহিস সালামের রোযাকে উত্তম বলে আখ্যায়িত করে ইরশাদ হয়েছেঃ
قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاصَوْمَ فَوْقَ صَوْمِ دَاوُدَ شَطْرُ الدَّهْرِ صِيَامُ يَوْمٍ وَإِفْطَارُ يَوْمٍ ”
আবু ক্বিলাবাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, দাঊদ (আঃ)-এর সওমের উপর কোন সওম নেই। তিনি বছরের অর্ধেক অর্থাৎ ঔ একদিন যদি এ সওম পালন করতেন, আরেক দিন বাদ দিতেন।
(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৬৩১)
অন্য এক হাদিসে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ
،َقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهعَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَفْضَلُ الصَّوْمِ صَوْمُ دَاوُدَ كَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا
আব্দুল্লাহ ইব্ন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছেন, সবোত্তম সাওম (রোযা) হল দাউদ (আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাওম (রোযা)। তিনি একদিন সাওম (রোযা) পালন করতেন আর একদিন সাওম (রোযা) রাখতেন না।
(সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৪০৩)
উপরেল্লেখিত হাদিস গুলোতে হযরত দাউদ আলাইহিস সালামের রোযা তথা ধারাবাহিকভাবে না রেখে একদিন রোযা রেখে অন্য দিন রোযা ছেড়ে দেওয়াকে উত্তম বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে তাই উলামায়ে কেরাম ধারাবাহিকভাবে রোযা না রেখে ভিন্নভিন্ন রোমা রাখাকে মুস্তাহাব বলেছেন।
(হাশিয়াতুত তহতাবী ১:৬৪২)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে উক্ত রোযাগুলো রেখে বর্ণিত ফজিলত প্রাপ্ত হওয়ার তৈফিক দান করুন। আমীন।
নামঃ মুহাম্মদ সালমান হুসাইন।
ইফতাঃ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ, জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ।
উলুমুল হাদিসঃ ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ, মাদ্রাসা বাইতুল উলুম ঢালকানগর।
তাকমীলঃ ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ, মাদ্রাসা বাইতুল উলুম ঢালকানগর।
হিফজঃ ২০০৭ শিক্ষাবর্ষ, জামিয়া আরাবিয়া হাজী ইউনুস কওমী মাদ্রাসা।
সিনিয়র শিক্ষকঃ হাজিপাড়া কাশীপুর নারায়ণগঞ্জ
কপিরাইট © ২০২২ ইসলামী শরীয়াহ্ অর্গানাইজেশন. সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত. ব্যবহারবিধি ও স্বত্বাধিকার আইন.